Friday, March 29

শুধু মধ্যবিরতি আমি যেন মাঝপথেই থেমে যাই কেবল
দূরত্ব বিষয়ে এরকমই ভাবি—কোনো অন্ত নাই যেদিকে যাই
অস্পৃশ্য দিনগুলি আমার, না-লেখা অক্ষর আমার অতীতে
প্রসারিত সমুদ্রের দিকে হাওয়া বয়ে যায়, অতএব বিকেল
স্থবিরতা, আমি অনন্ত মধ্যযামে মৃত মানুষদের কথা শুনি
তাদের গল্প, হাসি... অথচ মনে হয় কোনো দুঃখ নেই
দুঃখবোধ নেই, শুধু অনিবার অসারতা আর বিষাদরহিত রাত্রি
সময়ের গন্ডোলায় পড়ে আছে। ভেসে কি যায়?

আদি অন্ত নাই কোনো; পরিসর আছে, পরিসর কেবলই আনন্দনির্ঝর।

এই ক্ষণ যেন মুহূর্তের মৃত্যু ও নিরন্তর জন্মের মাঝে
শহরের প্রান্তের এক ঘর—যার অস্তিত্ব নাই
সন্ধ্যাপূর্ব কোলাহল গলিপথে ভেঙে পড়ার আগে
যেমন শান্ত হয়ে থাকে; অথচ নিঃশব্দ নয়
যেমন বহুকাল ঘুমিয়ে থাকে কেউ; অথচ স্বপ্নের
ভেতর আমাদের অভিজ্ঞতা হয়তো সত্যি নয়
দূরবিস্তৃত অপেক্ষার মতো তার শেষ নাই বলে মনে হয়

Wednesday, September 5

অ্যাড ইনফিনিটাম


জুয়াড়ির বিষণ্নতা নিয়ে আমি
   যখন রাত্রি থেকে দিনের দিকে ফিরি
   সারি সারি সেনোটাফ তখন
   ঘুমিয়ে যায়

ক্লান্ত ঘড়ির মতো আমার সময় ধীরে ধীরে
   বৃত্তাবর্তে ঘোরে— একইরকম
   আর আমি অপেক্ষায় থাকি ঋতুবদলের

আমি অপেক্ষায় থাকি—
   অনেক আয়োজনের পর হঠাৎ কোনো রাতে
অন্ধকার-শস্যের খেতজুড়ে কাকতাড়ুয়ার কোরাস
   শোনা যাবে আবার

   অনাহূত আমি নিজের কাছে নিজে
   সহজ সত্যের মতো জেনেছি—অবশিষ্ট কোনো
   কান্না নেই, হাসি নেই, স্বপ্ন নেই      শুধু এক
   ঘুম আমাকে বাঁচিয়ে তোলে—
   প্রতি সকালে
অবলীলায় কফিনের ডালা পুনরায় খুলে যায়।

Friday, May 18

স্বপ্নের ভেতর জেগে উঠে


অন্ধকার কথা বলছে, আমি দেখে নিচ্ছি ধূসর আকাশ
বৃষ্টি হবে, জলীয় বাতাসে মিশে যাচ্ছে আলো, তার অস্ফুট কণ্ঠ শুনছি
যেন শতাব্দীর ওপার থেকে পরিচয় মুছে আসছে স্বপ্ন
এই আমার জন্ম, এইখানে বেঁচে আছে কোলাহলের আড়ালে যে নীরবতা,
যে অন্তর্লীন প্রেক্ষিতে মিশে আছে মৃত্যু আর নিস্তব্ধতার গান
সেইখানে আমি বিবিধ বিষাদের প্রলোভন এড়িয়ে যাই,
আমি-ই যাই, আর তাই দ্বিধার অন্বয়, অহং এর উর্ধ্বে ও নিম্নে নেমে দেখি
সমস্ত স্থিরীকৃত অন্ধকার, জমাট, বৃষ্টির একমাত্র ফোঁটা—অনির্দিষ্ট
আছে জেনে স্বপ্নের ভেতর তলিয়ে যেতে পারি আরো
অবিচল, ক্রমের শেষে, তখনও, হয়ত অস্পষ্ট, তবুও থেকে যায়
আগুন নক্ষত্র বাতাস ও বৃষ্টির ভালোবাসা

Sunday, February 19

সেতু


তোমার প্রজ্বলিত শিখা
আমার দ্বিধাতুর অন্ধকার
তুরীয় উন্মনা শরীর
নিশ্চল।
এই অনতিক্রম্য নদী—
না ভাটি
না উজান
ভেসে যায় ভোর-লহরি।
থেমে থেমে নিরুদ্দেশ 
তারারা তখন 
মাস্তুল থেকে ঝরেছে ।


অন্ধকার ও শিখার
মানব ও মৃত্তিকার 
বিপরীতে
দৃশ্যের ভেতরে 
তুমি, আলো,
এমন তীব্র দহন ধরে রাখো!

Wednesday, November 16

অপসৃতি

স্পষ্ট কোনো আকৃতি গড়ে ওঠেনি তখনো
অন্ধকারের শৈশবজুড়ে শিল্পের ধ্যান
নক্ষত্র রাত্রির অনুষঙ্গ আর চাঁদ দ্যুতিময়
যখন মলিন,
স্বাতী নক্ষত্র—মৃতপ্রায়,
উপমার খোঁজে কালো বেড়াল
আকৃতি নিচ্ছে জন্মের।
প্রবণতা ভবিষ্যতের পথেই হাঁটে;
বস্তুত, সময়ের সাথে তার সম্পর্ক অচেনা।

ঘড়ির ভেতরে দিন রাত
সন্ধ্যার মৃদু নিশ্বাস জন্মান্তরকাল
এইখানে জড়িয়ে গেছে যেন
অদ্ভুত রাত্রির সঙ্গে অদ্ভুত রাত্রির প্রণয়।


মীমাংসিত মৃত্যুর বিকল্প হও!
দেখ, আমাদের সন্ততিরা কাঁদছে।
আর, একটা ট্রেন
ছুটন্ত রয়েছে—আমাদের থেকে দূর থেকে দূরে
দূরে, দূরে ধাবমান।

Wednesday, November 2

সিমিলি


স্বরগত বিভূতি তোমার, আমি স্থির নৈঃশব্দ্য
এই মন্দির টেরাকোটা নামহীন নির্মাণ
তোমার শর কৃপাণ বুকে বিঁধে আছে।
জড়োসড়ো সূর্যের দিনে আমি প্রলম্বিত লয়
স্থিরচিত্র নয়
শরীরমগ্ন চৈতন্যের ছায়া।
মেঘ ও পারাবত যুগপৎ ভেসে যায়
সোনালি আকাশে;
আমি স্রোতচিহ্ন
রুপালি জলে ফেনায়িত শাদা।
তুমি রথ নিয়ে ছুটেছ স্বপ্নমৃগয়ায়;
তূণীর ছেঁড়া বিভঙ্গে
ছিঁড়েখুঁড়ে দিয়েছ হৃদয়।
বিবিধ দিন শোকচিহ্নগুলোর ওঠানামা, ঋতুর পর্যায়ক্রম
তোমাকে শুনতে শুনতে ঘুমিয়ে যাওয়া অনিকেত জোছনায়।
মোহরের মতো উজ্জ্বল ঝরে যায় প্রান্তর সমুদ্র চন্দ্র মন্দির।
আমার নিবাস যে আকাশে তার গায়ে গায়ে নির্লিপ্তি নেমে আসে
যেন সেমেটারি থেকে ফিরে ক্লান্ত; বিকেলজুড়ে ঘুমিয়ে যাচ্ছে কন্যা।
© তারেক রহিম. ২০১২. Powered by Blogger.
© Absurd Dreams
Designed by: Maira Gall